চোখেরনিচের ত্বক
অনেক বেশি স্পর্শকাতর। এর নিচে অনেক ছোট ছোট রক্তনালি থাকে, নানা কারণে যা আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে এবং চোখের নিচের ত্বক কালো করে। এছাড়া
ফ্লুইড জমা হওয়ার কারণে চোখের নিচটা ফুলে যেতে থাকে এবং চোখের নিচেকালি পড়ে।
কারণ
বয়সের ছাপ : চোখের
নিচের ত্বক সবচেয়ে সংবেদনশীল ও বেশি পাতলা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরো পাতলা হয়ে
যায়। এমনকি উজ্জ্বলতা হারায়।
পারিবারিক : বংশগত
কারণেও অনেকের এ সমস্যা হয়।
ঘুমের ঘাটতি :
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল এবং
সূর্যরশ্মির প্রভাব।
রোগব্যাধি :
দীর্ঘদিন অসুখে ভুগলেও চোখের নিচে কালি পড়ে। মানসিক চাপ, অ্যালার্জি, ঠাণ্ডা বা সর্দি লাগা এ সমস্যার জন্য
দায়ী।
প্রসাধন : চোখ
কচলানো, চোখে বেশি প্রসাধনী ব্যবহার ও প্রসাধনী
না উঠিয়ে ঘুমাতে যাওয়া। এমনকি কমদামি প্রসাধনী ব্যবহার।
কম্পিউটার বা টিভি
: দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা কিংবা খুব বেশি সময় ধরে টিভি দেখা।
রক্তশূন্যতা :
রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া হলেও চোখের নিচে কালো দাগ হতে পারে।
গর্ভকালীন :
গর্ভাবস্থা বা ঋতুচক্রের সময় চোখের নিচে কালো দাগ পড়তে পারে।
লিভারের সমস্যা :
অনেক সময় যকৃতের সমস্যা কিংবা দীর্ঘদিন হজমের গোলমাল দেখা দিলে।
মানসিক চাপ : খুব
বেশি চাপে থাকা বা কোনো ব্যাপার নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় থাকলে।
পানিশূন্যতা :
শরীর থেকে অনেক বেশি মাত্রায় পানি বেরিয়ে গেলে ত্বক শুষ্ক এবং শরীর দুর্বল হয়ে
যায়। ফলে চোখের নিচে কালি পড়ে।
পরামর্শ
* রাত জাগার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
* সন্ধ্যার পর চা বা কফি না খাওয়া।
* রাতে প্রচুর লবণযুক্ত খাবার না খাওয়া।
* ঘুমানোর সময় একটু উঁচু বালিশ
ব্যবহার। এটি অনেক
সময় চোখের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
* রাতে চোখের প্রসাধনী ভালো করে পরিষ্কার
করে ঘুমাতে যাওয়া।
* রোদে বেরোনোর সময় কালো চশমা, ছাতা ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা।
* ঠাণ্ডা-সর্দি হলে রাতে শোবার সময় নাকের
ড্রপ বা স্প্রে ব্যবহার করুন।
* যেকোনো ধরনের মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকার
চেষ্টা করুন।
* প্রচুর পানি ও দুধ পান করা। তবে রাতে ঘুমানোর আগে বেশি পানি খাবেন
না। কারণ বারবার বাথরুমে যাওয়ার কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
* কুচি করা শসা দিয়ে গোল বল বানিয়ে চোখের
ওপর রাখুন। এ অবস্থায় অন্ধকার ঘরে১০ থেকে ১৫ মিনিট থাকুন। শসার পরিবর্তে ব্যবহার
করতে পারেন আলুর কুচিও।
* কদম ফুলের পাপড়ি বেটে ৫ থেকে ১০ মিনিট
লাগিয়ে রাখুন। এতে চোখের নিচের কালোদাগ অনেকটাই দূর হবে। এছাড়া পুদিনা পাতা বা
নিমপাতাও ব্যবহার করতে পারেন।
* কালি দূর করার জন্য চোখের নিচে লাগানোর
ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
* প্রতিদিন ঘুমানোর আগে অবশ্যই মুখ
পরিষ্কার করবেন।
* কোনো বিউটি পার্লারে গিয়ে প্রতি ১০ দিন
পর পর হোয়াইটেনিং ফেসিয়ালও করাতে পারেন।
* চোখ কচলানো একেবারে বাদ দিন। চোখে ঠাণ্ডা
সেঁক দিতে পারেন।
* প্রচুর মৌসুমি শাকসবজি আর ফলমূল খান।
* ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
কখন ডাক্তারের
কাছে যাবেন
হরমোনজনিতসমস্যা
বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যার কারণে চোখের নিচে কালো দাগ হলে এবংফোলা যদি সময়ের
সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। চোখের দৃষ্টিতে ব্যাঘাত ঘটলেঅবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাবেন।
ঘরোয়া সমাধান
শসার রস
প্রতিদিন শসার রস
লাগান। চোখের চারপাশে চামড়ায় ১৫ মিনিট লাগিয়ে পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দ্রুত
সমস্যার সমাধান হবে।
টমেটোর রস
টমেটোথেকে রস বের
করে নিন। এবার তুলার বলের সাহায্যে এই রস চোখের চারপাশেলাগান। ২০ মিনিট পর পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কালো দাগের পাশাপাশি চোখের ফোলাভাবও দূর হবে।
কাঠবাদাম তেল ও
দুধ
১ চা চামচ কাঠবাদাম
তেল ও ১চা চামচ দুধ মিশিয়ে নিন ভালো করে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পুরো মুখে
লাগিয়েনিন। চোখের নিচে কালো হওয়া জায়গায় ভালো করে লাগাবেন। দাগ দূর হবে এবং
ত্বকউজ্জ্বল হবে।
পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতা হাতে
পিষে নিয়ে এর রস চোখের নিচে লাগান। ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কালো দাগ
দ্রুত দূর হবে।
যা করবেন না
চোখ কচলানোর
অভ্যাস থাকলে বাদ দিন, এটা আপনার ত্বকের নিচের রক্তকণাগুলোকে
ক্ষতিগ্রস্ত করে।
No comments:
Post a Comment